Posts

Showing posts from July, 2023

হাংরি আন্দোলন সম্পর্কে শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়

Image
  হাংরি আন্দোলন : শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ধীমান চক্রবর্তী এবং মুর্শিদ এ এম প্র: আপনার কাছে কোনো চিঠি আছে মলয়ের বা সমীরের ? উ: না, না, আমি তো লিখিনি। যখন এসেছে, দেখাসাক্ষাৎ হয়েছে। কিন্তু চিঠি লিখিনি । তবে হাংরি জেনারেশন করে সবচেয়ে লাভবান হয়েছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় । আইওয়া থেকে ফিরে এসে সুনীল হাংরি জেনারেশনের সপক্ষে সাক্ষী দেয়। সেই সাক্ষীর জোরে, বুদ্ধদেব বসুর জোরেই ওরা মুক্তি পায় । পি.কে.সেন পুলিশ কমিশনার, আমাদের যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন। উৎপলকুমার বসুকে ডেকে পাঠান । বলেন, তোমরা এ সমস্ত অন্যায় কাজ করছ । এ সমস্ত কাজ করতে দেয়া হবে না । ওকে বলে যে, তুমি লেখো, আমি আর এ সমস্ত কাজ করব না । যদ্দুর মনে হয় শক্তি চট্টোপাধ্যায় আর উৎপল দুজনেই লিখে দিয়েছিল আমরা এসব করব না ।  প্র: শক্তি তো বিপক্ষে সাক্ষ্যও দিয়েছিলেন— উ: হ্যাঁ– প্র: আরও একটা ব্যাপার আছে। সুনীলবাবু যে আইওয়া থেকে চিঠি লিখেছিলেন মলয়কে যে —তোমরা এই আন্দোলন-টান্দোলন করো, কাছে থাকলে একটা থাপ্পড় দিতাম । আবার সেই সুনীলই মলয়ের পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছেন — এটা কীরকম ব্যাপার ? উ: সুনীলের এটা দ্বিচারিতা…. প্র: হাংরি আন্দোলন ১৯৬৫ স...

গল্প : আওয়ার লেডি অফ দি জিজুয়া

Image
  স্কুলে ভর্তি হইয়াছিলাম অত্যন্ত অল্প বয়সে, জনৈক পাদ্রির বদান্যতায়, তাঁহার নাম ফাদার হিলম্যান, সম্পূর্ণ নাম জানা হয় নাই, কী করিয়াই বা জিজ্ঞাসা করিব যে, ফাদার আপনার নাম কি । তিনি জার্মানি হইতে ভারতে আসিয়াছিলেন, তাহা তিনি আমার পিতৃদেবকে একদা বলিয়াছিলেন, এবং ভারতের বৈচিত্র্য ও বৈভিন্ন্যের বহুমাত্রিকতা তাঁহাকে অত্যন্ত মুগ্ধ করিয়াছিল ; তিনি মনে করিতেন যে এই দেশ সূর্যরশ্মির সাতটি রঙের বিস্ফোরণ হইতে জন্মগ্রহণ করিয়াছে  । পাদ্রিসাহেবকে প্রথমবার দেখিয়া আমি অবাক হইয়া গিয়াছিলাম, কেননা তৎপূর্বে এই প্রকার ধবলত্বক মানুষ আমি দেখি নাই । তাঁহার দেহ একটি শ্বেত বস্ত্রে ঢাকা, কেবল মুখ ও দুইটি হাত কনুই হইতে ঢাকা নহে। এইরূপ পোশাকও পূর্বে দেখি নাই । গীর্জার যাযক ফাদার হিলম্যান তাঁহার মুগ্ধতাকে জাগতিক রূপ দিবার নিমিত্ত  ফোটো তুলিতে ভালোবাসিতেন । সেসময়ে ডিজিটাল ক্যামেরা ও হাই রেজোলিউশান ফোটোগ্রাফি আবিষ্কার হয় নাই। কাঁচকড়ার রোল ফিল্মে ফোটো তোলা হইত, এবং একটি ফিল্মে বারোটি অথবা ষোলোটি ফোটো তোলা যাইত । কাঁচকড়ার ফিল্মটি  অন্ধকার ঘরে রক্তবর্ণ আলো জ্বালাইয়া, রসায়নে চোবাইয়া প্রস্ফূটিত করা হইত, এবং ত...

মলয় রায়চৌধুরীর উত্তরাধুনিক গল্প : তমে কেবি ছে ? সরস !

         “দ্যাখো, দ্যাখো, ওই তো টিভিতে শাহেনশাহের ঘোষণা পড়ে শোনাচ্ছে মোটোভাই । ক’দিন ধরে খবরের কাগজেও দিচ্ছে, সুযোগটা আমাদের নেয়া দরকার, সংসারের যা অবস্হা, তোমার চাকরি চলে গিয়ে”। স্বামী যতীনকে বলল অমৃতা ।         “আরে শাহেনশাহ আর মোটোভাইয়ের কথা বাদ দাও তো, সকলের অ্যাকাউন্টে আপনা থেকে টাকা আসবে বলেছিল শাহেনশাহ, উলটে আমাদের ব্যাঙ্কটাই লাটে উঠে গেল।” বলল যতীন।         “ফোন করে দ্যাখোই না, পাড়ার নিতাইরা তো বাড়ির সবাইকে নিয়ে ট্রাই করতে গেছে, নিশ্চয়ই পুরস্কার নিয়ে ফিরবে, দলে দলে লোক যাচ্ছে, সারা রাজত্বে সাড়া পড়ে গেছে।” বলল অমৃতা ।         “তুমিই ফোন করো, আমার তো মেজাজ খিঁচিয়ে থাকে, মুখ ফসকে যা-তা বলে ফেলবো, আর মোটাভাই চটে যাবে, ওর স্যাঙাতরা চটে গেলে আরও বিপদ ।” বলল যতীন ।         টিভিতে, খবরের কাগজে ফোন নম্বর দেয়া ছিল । মোবাইলে নম্বর আগেই সেভ করে রেখেছিল অমৃতা। ফোন করতেই ওদেক থেকে গম্ভীর কন্ঠস্বর...

উপন্যাস : গলগণ্ডপুরম

Image
  মলয় রায়চৌধুরীর উপন্যাস : গলগণ্ডপুরম  প্রথম পর্ব মনে পড়ছে, বাস কন্ডাক্টর বলেছিল, স্যার, আপনার পাশে যে লোকটা বসেছিল, সে তো নেমে চলে গেল, কিন্তু তার মাথাটা আপনার কাঁধে রয়ে গেছে । এই বাসে যারা চেপেছে তারা সবাই ল্যাংটো ; তা নাহলে চাপতে দেয়া হয় না । যাত্রীরা কে কোথায় যাচ্ছে বা ফিরছে বা আসছে তা চালক জানে না । চালকও ল্যাংটো । যে লোকটা নেমে গেল সে জানে প্রতারণার বিষয়বস্তু সর্বদাই একটি আকর্ষণীয় বিষয়, আর যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের স্বভাবে যা আছে তা বহাল থাকে আর সমাজ যখন নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয় তখন এক বা অন্য আকারে প্রতারকদের বিকাশ লাভের সম্ভাবনা থাকে। এই গলগণ্ডপুরমে প্রতারণার বিখ্যাত নায়ক নায়িকাদের ইতিহাসগুলোকে একত্রিত করা হবে যাতে দেখা যায় যে এই শিল্পটি অনেক রাজ্যপুরমে চর্চা করা হয়েছে। এদিকে গলগণ্ডপুরম নামের রাষ্ট্রপুরমে রূপগুলো-- ছদ্মবেশী, ভানকারী, প্রতারক, আর সব ধরণের জোচ্চোর; যারা সম্পদ, পদ, বা অর্জনের জন্য খ্যাতির মুখোশ পরেছে আর যারা নিছক শিল্পের উন্নতির জন্য এটি করেছেন।যেমন একজন লোক কেবল নানা রকমের কাক আঁকে তো আরেকজন আঁকে বউদের নেতিয়ে পড়া মাই । গলগণ্ডপুরমের নাগরি...