প্রদীপ চৌধুরী, ফরাসি কবি, বাঙালি কবি, হাংরি আন্দোলনের কবি : মলয় রায়চৌধুরী এক হাংরি জেনারেশন সাহিত্যের আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি, প্রদীপ চৌধুরী ২০২১ সালের ২৫ শে এপ্রিলের সকালে কোভিড -১৯ অসুখে আক্রান্ত হয়ে আটাত্তর বছর বয়সে মারা গেল । বেশ কিছুকাল যাবত ওর দুটো চোখই খারাপ হয়ে গিয়েছিল । লেখালিখি করতে পারছিল না । দুষ্প্রাপ্য বইগুলো, যা এতোকাল যত্ন করে রেখেছিল, মালার্মে, রেঁবো, বোদলেয়ার, ভেরলেন, বুকোস্কি, সিলিন, গিন্সবার্গ, কেরুয়াক, হ্যারল্ড নর্স, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, জীবনানন্দ দাশ, এমনকী ওর প্রিয় লেখক ডস্টয়ভস্কির বইগুলোও বিক্রি করে দিচ্ছিল একে-একে । আলমারি জুড়ে রাখা বহুকাল যাবত সম্পাদিত ‘স্বকাল/‘ফুঃ’ পত্রিকার কপিগুলো সন্দীপ দত্তের লাইব্রেরিতে দিয়ে দিলে ভালো হতো । কেমন করে ও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল জানি না । কেননা চোখের ওই অবস্হা নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরোনো তো অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল । হয়তো যারা বই-পত্রিকার লোভে ওর ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল, তাদের কারোর সঙ্গে ঢুকেছিল ভাইরাসটা । জীবনের প্রতিটি ব্যাপারের মতন মৃত্যুও যেন প্রদীপ চৌধুরীর কাছে অপ্রত্যাশিত যাত্রা ছিল না। ২০১৫ সালে আলাইন জেগুকে দেয়া সাক...
কফিহাউসে চেঙ্গিজদা, ল্যাঙড়াদা, গুলপিসি…. অ্যান্টি-হিস্ট্রির আড্ডা মলয় রায়চৌধুরী চেঙ্গিজ খান : যাক তোরা সব আগেই এসে বসে আছিস দেখছি । জানিস তো, আমিই মহান খান, কিন্তু এই ল্যাঙড়া তৈমুরের মতন খান নই । আসলে আমার নাম ছিঙ্গিস খাং ছিল, ইংরেজ ব্যাটারা নিজেদের উপনিবেশগুলোতে খানের ছড়াছড়ি দেখে আমাকেও খান বানিয়ে দিয়েছে । আমি তো কাফের, নাস্তিক, তোদের মতন আস্তিকান্তরিত নই । তবু আমাকে মোঙ্গোলরা জাতির পিতা মনে করে । সবাইক খবর দিয়েছিস তো যে আজকে কফিহাউসে জব্বর আড্ডা হবে ? তুই তো শুনেছি নিউমোনিয়া আর প্লেগে ভুগে হেগে-হেগে মরেছিলিস! রাশিয়ানরা কবর খুঁড়ে তোর কঙ্কাল যাচাই করে দেখেছিল যে তুই সত্যিই ল্যাঙড়া ছিলিস আর ডান হাতের কব্জি কাটা ছিল । ল্যাঙড়া তৈমুর : হায় মাওলা, কী করলা, তুমি মালাউন ? কী করব, তখন আমার সত্তর বছর বয়স, শীতকালের চিন, জানোই তো, আর টানতে পারিনি । তবে আমি কিন্তু কখনও খান পদবি ব্যবহার করিনি। হ্যাঁ, যতোজনকে পেরেছি, জানিয়েছি । ঋষিমুনিরা বলেছেন ম্লেচ্ছদের আড্ডায় আসবেন না ; আর বর্মায় সামরিক শাসন চলছে, তাই বাহাদুর শাহ জাফর হয়তো দেরি করে আসবেন । জাহাঙ্গির আর নুর জাহান আসবেন না ; পাকিস্তান স...
সন্মোহিনী, কামুক, দ্রোহী লেখিকা আনাঈস নিন : মলয় রায়চৌধুরী অ্যানাঈস নিনের আসল, সেন্সরবিহীন ডায়েরির মতো সূক্ষ্ম, অন্তর্দৃষ্টি এবং বেদনাসহ খুব কম লেখাই একজন নারীর বহুগামী মাংসল যৌনতা ও প্রেমের জীবনকে এমন খোলাখুলিভাবে মেলে ধরেছে । অসাধারণ জীবনের যাবতীয় তথ্য, সম্পর্কের শারীরিক দিকগুলির সাথে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবের সম্পূর্ণ বর্ণালীর ছটাকে স্পষ্টভাবে ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।এমনই এক যুবতী যিনি তাঁর যৌন এবং মানসিক আকাঙ্ক্ষাপূর্তির জন্য সামাজিক বিধিনিষেধ, অপরাধবোধ ও অনৈতিকতার তকমা বিসর্জন দিয়ে নিজেই নিজেকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন আর লিখে গেছেন, যা সাধারণত পুরুষরাও লিখতে ইতস্তত করে। নিন ছিলেন অপার্থিবভাবে নারীসুলভ, সূক্ষ্মতা, টেক্সচার এবং আবেগে আনন্দিত। নারীর অসারতা বা দুর্বলতা হিসেবে অনুভূতিগুলোকে চাপা দেননি। তাঁর আত্ম-জ্ঞান ছিল তাঁর কাছে একটি সম্পদ । তিনি নারীর অভ্যন্তরীণ বিশ্বের বর্ণনা করার জন্য অব্যর্থ শব্দাবলী খুঁজে পেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, "একজন মহিলার পুরুষের মতো আনন্দ পাওয়ার অধিকার রয়েছে!" . তার ডায়েরি শিখিয়েছে যে জীবনের গুণমান বাড়িয়ে তোলার জন্য সৌন্দর্যের ছো...
Comments
Post a Comment