কোনো কোনো কবি কেন জনপ্রিয় ?

 কবি এবং কবিতার জনপ্রিয়তার পেছনে কি রহস্য আছে ? অনেক কবি আছেন যাঁদের কবিতা জনপ্রিয়তা পায়নি, এমনকি যাঁরা কবিতা লেখেন তাঁরাও সেই কবির কবিতার বইয়ের নাম বা কোনো কবিতার নাম বলতে পারবেন না। আবার এমন কিছু কবি আছেন যাঁদের কবিতা মানুষ পাঠ করে, টাকাকড়ি রোজগার করেন, গান হয়, মানুষের মুখে ফেরে। কেন ? এর পিছনে কী রহস্য লুকিয়ে থাকে বা আছে ? 


এই ভাবনা সাম্প্রতিক, কেননা আমরা যখন হাংরি আন্দোলন আরম্ভ করি, তখন ‘জনপ্রিয় কবি’ বলতে বোঝাতো ‘আলোচিত কবি’, যাঁর কবিতা নিয়ে কফিহাউসে বা পত্রিকা দপতরে আলোচনা হয় । তাঁরা কেউ কেউ ছিলেন ‘শিষ্ট’ পত্রিকার সম্পাদক, বিশেষত কবিতা পত্রিকার সম্পাদক । কিন্তু সব পত্রিকার সম্পাদকরা আলোচিত হতেন না । যেমন পূর্ব্বাশা পত্রিকার সম্পাদক সঞ্জয় ভট্টাচার্য । পূর্ব্বাশা পত্রিকা ১৯৩৯ থেকে ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৩২ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত পূর্ব্বাশা-র সম্পাদনা করতেন সঞ্জয় ভট্টাচার্যকিংবা ধ্রুপদী পত্রিকার সম্পাদক সুশীল রায়। তাঁরা কবি হিসাবে তেমন আলোচিত ছিলেন না যেমন ‘কবিতা’ পত্রিকার সম্পাদক বুদ্ধদেব বসু । 


আমার মনে হয়, সেসময়ে, আর পরেও, যে কবিরা অধ্যাপনা করতেন, তাঁদের ছাত্র-ছাত্রীরা সাধারণত নিজেদের মধ্যে  ‘স্যারদের’ আলোচনা করতেন । বুদ্ধদেব বসু  সতীর্থ কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের সহযোগিতায় ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে ত্রৈমাসিক কবিতা (আশ্বিন ১৩৪৪) পত্রিকা সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন। পঁচিশ বছরেরও বেশি তিনি পত্রিকাটির ১০৪টি সংখ্যা সম্পাদনা করেছিলেন । অধ্যাপক ছিলেন বলে ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে ‘আধুনিক কবিতা’ বলতে কী বোঝায় তার বার্তা ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন ।  ফলে মনে করা হয় তিনি আধুনিক কাব্যআন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তৃতীয় বর্ষ ১ম সংখ্যা (আশ্বিন ১৩৪৪) থেকে বুদ্ধদেব বসু ও সমর সেন এবং ষষ্ঠ বর্ষ তৃতীয় সংখ্যা (চৈত্র ১৩৪৭) থেকে বুদ্ধদেব বসু একাই এর সম্পাদক ছিলেন। প্রেমেন্দ্র মিত্র আটটা কবিতার বই লিখেছেন, ফিল্ম লাইনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, কিন্তু বুদ্ধদেব বসুর মতন আলোচিত ছিলেন না । তিরিশের কবিরা সবাই অধ্যাপনা করতেন বটে কিন্তু সবাই বুদ্ধদেব বসুর মতন আলোচিত ছিলেন না । বুদ্ধদেব বসু হয়ে উঠেছিলেন কবিতার প্রতিষ্ঠান। জীবনানন্দ ক্রমশ আলোচিত হয়ে ওঠেন এবং তা শিক্ষকতার জন্য নয় ; তাঁর কবিতার আকর্ষণ ক্ষমতার জন্য । তবু, সেসময়ে তিনি বুদ্ধদেব বসুর মতন আলোচিত ছিলেন না ।


১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে, ১৪ আগস্ট রাত এগারোটায় কলকাতা বেতারে প্রাসংগিক কথিকা ও কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নেন অমল হোম, সজনীকান্ত দাস, প্রবোধ কুমার সান্যাল, নিরঞ্জন মজুমদার প্রমুখঅর্থাৎ সেই সময় থেকে কবিতার প্রচারে প্রযুক্তির প্রয়োগ আরম্ভ হল । পরে আকাশবাণী থেকে নিয়মিত কবিতাপাঠের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কবিদের শ্রোতাদের কাছে তুলে ধরার ব্যবস্হা হয় । সবাই সুযোগ পেতেন না ; যাঁদের যোগাযোগ ছিল তাঁরা কবিতাপাঠ করতেন । দূরদর্শন আসার পর সেখানেও কবিতাপাঠের সুযোগ পেতে লাগলেন এবং আলোচিত হতে লাগলেন নির্দিষ্ট কবিরা । পাঠকবৃদ্ধির জন্য সংবাদপত্রগুলো কবিদের সুযোগ দেয়া আরম্ভ করলো ; সব কবিদের নয়, নির্দিষ্ট কবিদের ।


স্বাভাবিকভাবে, জনপ্রিয়তা বলতে যা বোঝায় তা আরম্ভ হলো পঞ্চাশের দশকে, যখন কিনা চল্লিশের দশকের অধিকাংশ কবি জনগণের কবিতা লিখতেন । বুদ্ধদেব বসুর যাত্রাপথ অনুসরণ করে পঞ্চাশের দশকে দীপক মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও আনন্দ বাগচী আরম্ভ করেন ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকা । কৃত্তিবাস প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৫৩ সালে। দীপক মজুমদার ও আনন্দ বাগচীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে কেবল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এই পত্রিকার অভিভাবক হয়ে ওঠেন এবং বুদ্ধদেব বসু যেমন ছাত্র-ছাত্রীদের আকর্ষণ করতে পেরেছিলেন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আকর্ষণ করতে চাইলেন উঠতি কবিদের ।  বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’ পত্রিকা তখনও চলছে। । সেই সময়ে জীবনানন্দ দাশ, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বিষ্ণু দে, অমিয় চক্রবর্তী, সমর সেনের মত  কবিরা থাকতেও এঁদের থেকে কবিতা না নিয়ে যুবকদের কবিতা নিয়ে প্রকাশ হতে থাকল কৃত্তিবাস। তরুণদের দলে টানার জন্য অধ্যাপক-কবি কবি শঙ্খ ঘোষের খাতা জোর করে নিয়ে এসেছিলেন সুনীল। প্রকাশিত হয় তাঁর ‘দিনগুলি রাতগুলি’ কবিতাটি।


দেড় দশক ধরে চলা এই পত্রিকাটি ‘কবিতা’ পত্রিকাকে সরিয়ে নিজেই একটি  প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে। পনেরো বছর পরে কৃত্তিবাসের পঁচিশতম সংখ্যা প্রকাশ পায়। ১-২৫ সংখ্যাই কৃত্তিবাসের প্রথম পর্ব । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ততোদিনে নিজের ভক্তদের দল গড়ে ফেলতে পেরেছেন ।  ১৯৬৯ সালের পর ‘কৃত্তিবাস’ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে। এরপর আবার চালু হয়, নতুন উঠতি কবিদের ধরে রাখার জন্য, মাসিক পত্রিকা হিসেবে। তখন থেকে ‘কৃত্তিবাস’ আর শুধু কবিতার পত্রিকা থাকে না, গদ্যও সমান তালে ছাপা হতে থাকে, কেননা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তখন কেবল আলোচিত নন, জনপ্রিয়ও । এই জনপ্রিয়তা্র ইশারাও কিন্তু বুদ্ধদেব বসু দিয়েছিলেন শার্ল বোদলেয়ারের ‘ক্লেদজ কুসুম’ অনুবাদ করে এবং কৃত্তিবাসের কবিদের সঙ্গে বোদলেয়ারের জীবনযাপনের পরিচয় করিয়ে । কৃত্তিবাসের কবিরা বোদলেয়ারের মতন কলকাতার লাতিন কোয়ার্টার, আবসাঁথের জায়গায় খালাসিটোলা, মাতলামির অভিনয়, মাঝরাতের হইচই ইত্যাদির মাধ্যমে তরুণ কবি ও সম্পাদকদের মাঝে লোকমুখে একধরণের জনপ্রিয়তা গড়ে তুলতে পারলেন । এ ক্ষেত্রেও সবাই নন, নির্দিষ্ট কয়েকজন, যাঁরা অনুরাগীর দল গড়ে নিতে পারলেন । একই আচরণ করে শক্তি চট্টোপাধ্যায় জনপ্রিয় হলেও অমিতাভ দাশগুপ্ত হলেন না, কেননা অমিতাভ দাশগুপ্ত বাজারের প্রশ্রয় পেলেন না । 

কেন কেউ অনুরাগী হতে চাইবে ? তা টের পাওয়া যায় ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকা কিছুকাল বন্ধ থাকার কারণে । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আনন্দবাজারে যোগ দেবার পর অভীক সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্ব এমন পর্যায়ে নিয়ে যান যে দেশ পত্রিকার কবিতার পৃষ্ঠা দ্বিগুণ করা থেকে কোন কবিকে আনন্দ পুরস্কার দেয়া হবে তাও নির্ণয় করার ক্ষমতা পেয়ে যান । ফলে কাদের কবিতা পড়া দরকার তার ইশারা দিতে লাগলেন পাঠকদের । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কবিতার পাতার দায়িত্ব দিয়েছিলেন জয় গোস্বামীকে । তাঁর কাছ থেকে নিয়ে দিলেন শ্রীজাতকে। ইতিমধ্যে প্রাইভেট টিভির প্রসার ঘটতে থাকলো । তার মালিকরা যাঁদের তুলে ধরতে চাইলেন তাঁরা প্রচার পেলেন । 

এর পরই ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্হা ঘোষণার দরুন   বিভিন্ন ধরনের গান, কবিতা, উপন্যাস, ছোটোগল্প- এগুলিও সেন্সর করা হয়েছিল। জ্যোতির্ময় দত্ত, শঙ্খ ঘোষ, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গাঙ্গুলী,, মণীশ ঘটক, কমলেশ সেন, শুভেন্দুশেখর মুখোপাধ্যায়, পান্নালাল মল্লিক, অঞ্জন কর, মণিভূষণ ভট্টাচার্য, দীপক মজুমদার, সুনীল গাঙ্গুলি, গৌরকিশোর ঘোষ, সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত, বিদ্যুৎবরণ চক্রবর্তী, শম্ভু রক্ষিত প্রমুখের কবিতা, সমর সেনের গদ্য, কৃষ্ণ চক্রবর্তী ও সুখরঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস, উদয় রায়ের গল্প প্রভৃতির পাশাপাশি নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথের গান এবং কবিতার প্রচারেও সেন্সর আরোপ করা হয়েছিল। জরুরি অবস্হা তুলে নেবার পর বাংলায় যে লিটল ম্যাগাজিন বিস্ফোরণ হলো, তাতে কবিদের জন্যে প্রচারিত ও জনপ্রিয় হবার সুযোগ হলো, বিশেষ করে সেই কবিদের যাঁরা দেশ-আনন্দবাজারের সমর্থন পেতে লাগলেন । বামপন্হী সরকার এসে সংস্কৃতি বিভাগ আর অ্যাকাডেমির মাধ্যমে পাল্টা প্রতিষ্ঠানের বনেদ তৈরি করলেন বটে কিন্তু জনপ্রিয় হতে চান এমন কবিদের নিজের দিকে টানতে পারলেন না । সেই টানার কাজটা করতে পারল তৃণমূল দল, কয়েকজন কবিকে গুরুত্ব দিয়ে কবিদের দলে টানার প্রক্রিয়া। 

কবিতা মাসে-মাসে, সপ্তাহে-সপ্তাহে, ঘণ্টায়-ঘণ্টায় শেষ হবার পর বাণিজ্যিকভাবে সম্ভবত কবিতাপাঠের প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ড করলেন শান্তি লাহিড়ী । অনেকের কবিতাপাঠ ছিল সেই রেকর্ডে । এখন ওটা সিডিতে পাওয়া যায় । শম্ভু মিত্র, কাজী সব্যসাচী তিরিশের কবিদের কবিতা টেপ রেকর্ডে পাঠ করলেন। বিষ্ণু দে, সুধীন্দ্রনাথ দত্তও পাঠ করলেন । দেখা দিলেন বাচিক শিল্পীরা, যাঁরা প্রথম দিকে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, তিরিশের কবিদের কবিতা আবৃত্তি করতেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে লাগলেন নতুন কবিরা এবং বাচিক শিল্পীদের জন্য আয়ের পন্হা গড়ে দিতে পারলো কবিতা । নতুন কবিরা টাকা দিয়ে বাচিক শিল্পীর ক্যাসেট-সিডি ইত্যাদি বের করা আরম্ভ করলেন । কবিতা বইয়ের প্রকাশকরা প্রভাব খাটিয়ে, বিক্রি বাড়াবার জন্য,  কাব্যগ্রন্হের রিভিউ করাতে লাগলেন । নামের দামামা বাজানো ছাড়া যে মনে করিয়ে রাখা যাবে না তা কবি এবং তাঁর প্রকাশকদের টের পেতে অসুবিধা হলো না ।

কবির সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়তে লাগলো লিটল ম্যাগাজিনের সঙ্গে । বুদ্ধদেব বসু, সুশীল রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ আধুনিকতাবাদী চিন্তাভাবনার সম্পাদকরা বিশ্বাস করতেন ছাঁটাই করার, একে-তাকে বাদ দেবার মানদণ্ডে । সেই মানদণ্ডকে ভণ্ডুল করতে দেখা দিলেন প্রভাত চৌধুরী, যিনি সবাইকে নিজের ছাতার তলায় এনে ‘কবিতা পাক্ষিক’ পত্রিকায় অচেনা-অজানাদের কবিতাও প্রকাশ করতে আরম্ভ করলেন এবং সেই মানদণ্ডের নাম দিলেন ‘অধুনান্তিক’। প্রভাত চৌধুরী কাঁধে ঝোলা নিয়ে বিভিন্ন জেলার কবিতাপাঠের আসরে বা জমায়েতে পৌঁছোতে লাগলেন যা বুদ্ধদেব বসু, সুশীল রায়, অরুণকুমার সরকার, সঞ্জয় ভট্টাচার্যের সোফিসটিকেটেড চরিত্রের সঙ্গে খাপ খায় না । কবির সংখ্যাবৃদ্ধির ফলে কবিরাও সবাইকে মনে রাখার অসুবিধা ভোগ করা আরম্ভ করলেন ।

এতো সব করার পরও অনেকে থেকে গেলেন অনালোকিত । তার কারণ প্রযুক্তি আসার পর যে নেটওয়র্কিঙ প্রয়োজন, যোগাযোগ দরকার তা সবাই, লজ্জাবশত, আত্মাভিমানের কারণে, করে উঠতে পারলেন না । প্রচার বেশি, এমন পত্রিকাতে কবিতা পাঠানোয় কুন্ঠা বোধ করলেন । নেটওয়র্কিঙ রবীন্দ্রনাথ যেমন করতেন, তেমন নেটওয়র্কিঙ যাঁরা করতে পারলেন, তাঁদের মনে রাখায় অসুবিধা দেখা দেয়নি । যেমন সুমন চট্টোপাধ্যায়, যিনি কবিতা লিখেছেন, মঞ্চে গিটার বাজিয়ে গান গেয়েছেন, রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকেছেন । ফেসবুক এবং ইনটারনেট আসার পর প্রয়োজন হয়েছে বিশ্বব্যাপী নেটওয়র্কিঙের । কবি বা কবি-বিশেষের অনুগামীরা, কাব্যগ্রন্হের প্রকাশকরা,  ‘নাম’ ও বিশেষ ‘কবিতার নাম’ অবিরাম মনে করিয়ে দিতে থাকেন । সুতরাং জনপ্রিয়তা ব্যাপারটায় রহস্য নেই । সংসারত্যাগী বাউলদেরও আজকাল নেটওয়র্কিঙের মাধ্যমে জনপ্রিয় হতে হয়, ডলার রোজগারের জন্য বিদেশে গিয়ে মঞ্চে নাচতে হয়।

 



Comments

Popular posts from this blog

কফিহাউসে চেঙ্গিজদা, ল্যাঙড়াদা, গুলপিসি...অ্যান্টি-হিস্ট্রির আড্ডা : মলয় রায়চৌধুরী লিখিত পৃথিবীর ইতিহাস

প্রদীপ চৌধুরী, ফরাসি কবি, বাঙালি কবি, হাংরি আন্দোলনের কবি : মলয় রায়চৌধুরী

Malay Roychoudhury interviewed by Anupam Mukhopadhyay