কফিহাউসে চেঙ্গিজদা, ল্যাঙড়াদা, গুলপিসি…. অ্যান্টি-হিস্ট্রির আড্ডা মলয় রায়চৌধুরী চেঙ্গিজ খান : যাক তোরা সব আগেই এসে বসে আছিস দেখছি । জানিস তো, আমিই মহান খান, কিন্তু এই ল্যাঙড়া তৈমুরের মতন খান নই । আসলে আমার নাম ছিঙ্গিস খাং ছিল, ইংরেজ ব্যাটারা নিজেদের উপনিবেশগুলোতে খানের ছড়াছড়ি দেখে আমাকেও খান বানিয়ে দিয়েছে । আমি তো কাফের, নাস্তিক, তোদের মতন আস্তিকান্তরিত নই । তবু আমাকে মোঙ্গোলরা জাতির পিতা মনে করে । সবাইক খবর দিয়েছিস তো যে আজকে কফিহাউসে জব্বর আড্ডা হবে ? তুই তো শুনেছি নিউমোনিয়া আর প্লেগে ভুগে হেগে-হেগে মরেছিলিস! রাশিয়ানরা কবর খুঁড়ে তোর কঙ্কাল যাচাই করে দেখেছিল যে তুই সত্যিই ল্যাঙড়া ছিলিস আর ডান হাতের কব্জি কাটা ছিল । ল্যাঙড়া তৈমুর : হায় মাওলা, কী করলা, তুমি মালাউন ? কী করব, তখন আমার সত্তর বছর বয়স, শীতকালের চিন, জানোই তো, আর টানতে পারিনি । তবে আমি কিন্তু কখনও খান পদবি ব্যবহার করিনি। হ্যাঁ, যতোজনকে পেরেছি, জানিয়েছি । ঋষিমুনিরা বলেছেন ম্লেচ্ছদের আড্ডায় আসবেন না ; আর বর্মায় সামরিক শাসন চলছে, তাই বাহাদুর শাহ জাফর হয়তো দেরি করে আসবেন । জাহাঙ্গির আর নুর জাহান আসবেন না ; পাকিস্তান স...
প্রদীপ চৌধুরী, ফরাসি কবি, বাঙালি কবি, হাংরি আন্দোলনের কবি : মলয় রায়চৌধুরী এক হাংরি জেনারেশন সাহিত্যের আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি, প্রদীপ চৌধুরী ২০২১ সালের ২৫ শে এপ্রিলের সকালে কোভিড -১৯ অসুখে আক্রান্ত হয়ে আটাত্তর বছর বয়সে মারা গেল । বেশ কিছুকাল যাবত ওর দুটো চোখই খারাপ হয়ে গিয়েছিল । লেখালিখি করতে পারছিল না । দুষ্প্রাপ্য বইগুলো, যা এতোকাল যত্ন করে রেখেছিল, মালার্মে, রেঁবো, বোদলেয়ার, ভেরলেন, বুকোস্কি, সিলিন, গিন্সবার্গ, কেরুয়াক, হ্যারল্ড নর্স, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, জীবনানন্দ দাশ, এমনকী ওর প্রিয় লেখক ডস্টয়ভস্কির বইগুলোও বিক্রি করে দিচ্ছিল একে-একে । আলমারি জুড়ে রাখা বহুকাল যাবত সম্পাদিত ‘স্বকাল/‘ফুঃ’ পত্রিকার কপিগুলো সন্দীপ দত্তের লাইব্রেরিতে দিয়ে দিলে ভালো হতো । কেমন করে ও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল জানি না । কেননা চোখের ওই অবস্হা নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরোনো তো অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল । হয়তো যারা বই-পত্রিকার লোভে ওর ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল, তাদের কারোর সঙ্গে ঢুকেছিল ভাইরাসটা । জীবনের প্রতিটি ব্যাপারের মতন মৃত্যুও যেন প্রদীপ চৌধুরীর কাছে অপ্রত্যাশিত যাত্রা ছিল না। ২০১৫ সালে আলাইন জেগুকে দেয়া সাক...
অনুপম মুখোপাধ্যায় নিয়েছেন মলয় রায়চৌধুরীর সাক্ষাৎকার মলয় রায়চৌধুরী ।বাংলা কবিতার নুনছাল উঠে-যাওয়া চেহারাটা যেন চোখের সামনে জেগে ওঠে যখন এই নামটি উচ্চারিত হয়। ১৯৬১ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত তিনি বাংলা কবিতা লিখেছেন। সেই চর্চা বাঙালি পাঠককে স্বস্তিতে রাখেনি। ষাটের দশকের বিখ্যাত, অনেকের মতে কুখ্যাত, হাংরি আন্দোলনের মলয়ই ছিলেন প্রাণপুরুষ। এই আন্দোলন তাঁকে কারাদণ্ডের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছিল। স্বাধীন ভারতধের প্রথম বাঙালি কবি, তাঁর কোমরে পড়েছিল পুলিশের দড়ি, হাঁটানো হয়েছিল প্রকাশ্য দিবালোকে। অভিযোগ ছিল কবিতায় অশ্লীলতা। শুরু হয়েছিল বিখ্যাত হাংরি মামলা, যা আজও কিম্বদন্তি হয়ে আছে। শক্তি চট্টোপাধ্যায় রাজসাক্ষী। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, তরুণ সান্যাল, জ্যোতির্ময় দত্ত, সত্রাজিৎ দত্ত নিম্ন আদালতে সাক্ষী ছিলেন মলয়ের হয়ে। সেই কবিতা 'প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার '। বাংলা কবিতার অন্যতম স্বল্পপঠিত বিখ্যাত কবিতা।আজ সেই মলয় রায়চৌধুরী মুম্বাই-প্রবাসী। কলকাতাকে পাকাপাকিভাবে ছেড়ে গিয়েছেন সেখানে।কিন্তু তাঁকে ধরা গেল। ধরা দিলেন আন্তর্জালে। রাজি হলেন এই সাক্ষাৎকার দিতে। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করা হয়েছে ই-মেলের মাধ্যমে। উঠে এ...
Comments
Post a Comment